mepz
MEPZ  
  Welcome To MEPZ
  Example Subpage
  Contact
  About MEPZ
  Information About AMIE
  AMIE Study
  সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি???
  বিদেশে উচ্চশিক্ষা
  আপনার কি কোন প্রশ্ন আছে, বিদেশে লেখাপড়ার বিষয়ে?
  সেরা ২০ টি কম্পিউটার বাংলা টিপস
  ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর
  রূপচর্চা
  লাইলাতুল কদর ও কিছু প্রশ্ন
ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন : আমার প্রতিবেশিনী একজন আমেরিকান খ্রিস্টান। খ্রিস্টমাস উপলক্ষে তিনি আমাকে কিছু হাদিয়া পাঠিয়েছেন। আমি তাকে এ হাদিয়াগুলো ফেরত দিতে পারছি না; যাতে তিনি রেগে না যান!! আমি কি এ হাদিয়াগুলো গ্রহণ করতে পারি যেভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফেরদের পাঠানো হাদিয়া গ্রহণ করেছেন।

উত্তর :

আলহামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।

এক:

মূলতঃ কাফেরের দেয়া হাদিয়া গ্রহণ করা জায়েয; এতে করে তার সাথে সখ্যতা তৈরি হয়, তাকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করা যায়। ঠিক যেমনিভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুকাওকাস ও অন্যান্য কিছু কিছু কাফেরের হাদিয়া গ্রহণ করেছিলেন।

ইমাম বুখারি তাঁর সহিহ গ্রন্থে একটি পরিচ্ছেদের শিরোনাম দেন এভাবে: “মুশরিকদের হাদিয়া গ্রহণ শীর্ষক পরিচ্ছেদ”। বুখারি (রহঃ) বলেন: আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন: ইব্রাহিম (আঃ) সারাকে নিয়ে সফরে বের হলেন। তিনি এমন একটি গ্রামে প্রবেশ করলেন যেখানে ছিল একজন বাদশাহ বা প্রতাপশালী। তিনি বললেন: সারাকে উপঢৌকন হিসেবে ‘হাজেরা’ কে দাও। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে (রোস্টকরা) বিষযুক্ত বকরী হাদিয়া পাঠানো হয়েছিল। আবু হুমাইদ বলেন: আইলার বাদশাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একটি সাদা রঙের খচ্চর ও একটি চাদর উপহার পাঠিয়েছিল এবং তাঁর নিকট তাদের কবিতার ছন্দ ব্যবহার করে চিঠি লিখেছিল। এক ইহুদি নারী কর্তৃক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিষমাখা ছাগল হাদিয়া দেওয়ার ঘটনাও তিনি উল্লেখ করেছেন।

দুই:

হৃদ্যতা তৈরির জন্য ও ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য কোন মুসলমানের পক্ষ থেকে কাফেরকে বা মুশরিককে উপহার দেয়া জায়েয। বিশেষতঃ যদি প্রতিবেশী হয় অথবা আত্মীয় হয়। উমর (রাঃ) মক্কায় বসবাসকারী তাঁর মুশরিক ভাইকে একটি হুল্লাহ (এক ধরনের পোশাক) উপহার দিয়েছিলেন।”[সহিহ বুখারি, ২৬১৯]

তবে কাফেরদের কোন উৎসবের দিন তাদেরকে উপহার দেয়া যাবে না। কেননা এটা এই বাতিল দিবসকে স্বীকৃতি দেয়া ও সেটা উদযাপনের পর্যায়ে পড়ে। আর তা যদি এমন হাদিয়া হয় যা দিবস উদযাপনের কাজে লাগে যেমন- খাবার বা মোমবাতি ইত্যাদি তাহলে সেটা আরও বেশি জঘন্য হারাম। কোন কোন আলেমের মতে- সেটা কুফরি।

‘আল-তাজ ওয়াল ইকলিল’ গ্রন্থে বলেন: কোন খ্রিস্টানকে তার ঈদ বা উৎসবের দিন উপলক্ষে উপহার দেয়াকে ইবনুল কাসেম মাকরূহ (অপছন্দনীয়) বলেছেন। অনুরূপভাবে কোন ইহুদীকে তার উৎসব উদযাপন উপলক্ষে খেজুর পাতা দেয়াও মাকরূহ। সমাপ্ত।

হাম্বলি মাযহাবের ফিকাহর গ্রন্থ ‘আল-ইকনা’ তে বলা হয়েছে- “ইহুদি-খ্রিস্টানদের উৎসবে যোগদান করা, সেই দিন উপলক্ষে বেচাবিক্রি করা ও উপহার বিনিময় করা হারাম”। সমাপ্ত।

বরং এ দিন উপলক্ষে কোন মুসলমানকে হাদিয়া দেয়াও জায়েয নয়। পূর্বোল্লেখিত হানাফি মাযহাবের বক্তব্যে এ কথা এসেছে। শাইখুল ইসলাম (রহঃ) বলেন: যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে এ উৎসবগুলোর মৌসুমে এমন কোন উপহার দেয়, এ উৎসব ছাড়া স্বভাবতঃ যে উপহার দেয়া হয় না— সে উপহার গ্রহণ করা যাবে না। বিশেষতঃ সে উপঢৌকনের মাঝে যদি তাদের সাথে সাদৃশ্য তৈরি করে এমন কিছু থাকে। যেমন- যীশুর জন্মদিবস উপলক্ষে মোমবাতি বা এ জাতীয় কিছু উপহার দেয়া অথবা তাদের রোজার শেষ বৃহস্পতিবারে ডিম, দুধ ও ছাগল উপহার দেয়া। একইভাবে এ উৎসবগুলোর মৌসুমে এ উৎসবগুলোকে উপলক্ষ করে কোন মুসলমানকে উপহার দেয়া যাবে না। বিশেষতঃ উপহারটি যদি তাদের সাথে সাদৃশ্য তৈরি করে এমন কিছু হয়; যেমনটি ইতিপূর্বেই আমরা উল্লেখ করেছি।[ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকিম ১/২৭৭]

তিন:

আর কাফেরদের উৎসবের দিন তাদের দেয়া উপহার গ্রহণ করতে দোষের কিছু নেই। উপহার গ্রহণ করা— তাদের উৎসবে যোগদান বা এতে স্বীকৃতি প্রদানের পর্যায়ে পড়ে না। বরং ভাল ব্যবহার, সখ্যতা তৈরী, ইসলামের দিকে দাওয়াতের উদ্দেশ্য নিয়ে সে উপহার গ্রহণ করা যাবে। যে কাফের মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করে না আল্লাহ তাআলা সে কাফেরের সাথে ভাল ব্যবহার ও ন্যায্য আচরণ করা বৈধ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন: “ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন।”[সূরা মুমতাহিনা, আয়াত:০৮]

কিন্তু ভাল ব্যবহার ও ন্যায্য আচরণের অর্থ এ নয় যে, তাদের সাথে অন্তরঙ্গতা ও ভালবাসা তৈরী হবে। কারণ কাফেরের সাথে অন্তরঙ্গতা ও ভালবাসা করা জায়েয নয়। তাকে বন্ধু ও সাথী হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বলেন: “যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর সাহায্য দিয়ে। তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে।”[সূরা আল-মুজাদালা, আয়াত: ২২] তিনি আরও বলেন: “মুমিনগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তারা যে সত্য তোমাদের কাছে আগমন করেছে, তা অস্বীকার করছে।”[সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত: ১]

ইবনে আবু শাইবা বর্ণনা করেন যে, একবার এক মহিলা আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করল, কিছু অগ্নিপূজক মহিলা আমাদের শিশুদেরকে দুধপান করায়। তাদের ঈদ-উৎসবের সময় তারা আমাদেরকে হাদিয়া দেয়। আয়েশা (রাঃ) বললেন: উৎসব উপলক্ষে যা কিছু জবাই করা হয়ে তা খাবে না; কিন্তু তাদের গাছের ফল খেতে পার। আবু বারাযা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: কিছু অগ্নিপূজক তাঁর প্রতিবেশী ছিল। তারা নওরোজ ও মেহেরযান উপলক্ষে তাকে হাদিয়া দিত। তখন তিনি তাঁর পরিবারকে বলতেন: ফলজাতীয় জিনিসগুলো খাও; আর অন্যগুলো ফেলে দাও।

এ দলিলগুলো প্রমাণ করে যে, কাফেরদের উৎসবের সাথে তাদের হাদিয়া গ্রহণ নিষিদ্ধ হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। বরং সব সময়ের বিধান এক। যেহেতু হাদিয়া গ্রহণের মধ্যে তাদের ধর্মীয় নিদর্শনকে সহযোগিতা করার কিছু নেই।

এরপর তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যে, আহলে কিতাবের জবাইকৃত প্রাণী খাওয়া বৈধ হলেও যা উৎসবের জন্য জবাই করা হয়েছে তা খাওয়া জায়েয নয়। তিনি বলেন: আহলে কিতাবদের উৎসবের সেসব খাবার খাওয়া যাবে যেগুলো কিনে আনা হয়েছে, অথবা হাদিয়া হিসেবে এসেছে। তবে উৎসব উপলক্ষে জবাইকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া যাবে না। আর অগ্নিপূজকদের জবাইকৃত পশুর গোশত খাওয়ার বিধান তো সবার জানা আছে— এটা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। আহলে কিতাব (ইহুদি ও খ্রিস্টান) তাদের ঈদ উপলক্ষ্যে যে প্রাণী জবাই করে অথবা গায়রুল্লাহর নৈকট্য হাছিলের উদ্দেশ্যে তারা যে প্রাণী জবাই করে যেমন- ঈসা (আঃ) বা শুক্রতারার নৈকট্য হাছিলের জন্য (ঠিক মুসলমানেরা যেভাবে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য জবাই করে) সেগুলোর ব্যাপারে ইমাম আহমাদ থেকে দুইটি অভিমত পাওয়া যায়। তাঁর থেকে বর্ণিত প্রসিদ্ধ মত হচ্ছে- এগুলো খাওয়া জায়েয হবে না; যদিও জবাই এর সময় গায়রুল্লাহর নাম না নেয়া হয়। এই গোশত খাওয়া হারাম হওয়ার হুকুমটি আয়েশা (রাঃ) ও ইবনে উমর (রাঃ) থেকেও বর্ণিত আছে…।[ইকতিযাউস সিরাতিল মুস্তাকিম ১/২৫১]

Today, there have been 2 visitors (9 hits) on this page!
 
   
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free